………আপনারা যারা সাকিব আল হাসান কে নিয়ে ট্রল করছেন……
সাকিব আল হাসান ক্রিকেট খেলার মত মানসিক অবস্থায় নেই…সংক্রান্ত পোস্ট আর কমেন্ট পড়ে মনে হলো সাকিব বড় ধরনের অপরাধ করে
ফেলেছেন৷ আসলেই কি? সবার কথায় বা কমেন্টে মোটামুটি কয়েকটি ব্যাপার উঠে এসেছে।
১. জাতীয় দলে খেলার সময়েই তালবাহানা শুরু করছে সাকিব।
২. আইপিএল খেললে কি এই ক্লান্তি থাকত? ব্যাটায় ঠিকেই আইপিএল খেলত।
৩. এসব আসলে সাকিবের ধান্দাবাজি। জাতীয় দল থেকে ছুটি নিয়ে ব্যাটায় বিজ্ঞাপন করবে। এসব কি আমরা বুঝিনা?
পয়েন্ট ধরে ধরে এবার আলোচনা করা যাক।
১. ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার ট্রেসকোথিক এর কথা মনে আছে? যদি ভুল না করে থাকি তবে তার কল্যানেই ক্রিকেট বিশ্ব প্রথম জেনেছিল ক্রিকেটেও মানসিক অবসাদের কথা। পরে মানসিক অবসাদের কারনে ক্রিকেট থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসনে গেছেন স্টোকসরাও। তাদের বেলায় সবার ছিল সহানুভূতি। সাকিবের বেলায় সমালোচনা। দেশি ক্রিকেটার বলে? করোনা কালীন সময়ে বায়োবাবলের কারনে ক্রিকেট আরো বেশি কঠিন হয়েছে। ক্রিকেটাররা হাপিয়ে উঠছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড তো প্লেয়ারদের সতেজ রাখতে অনেক তারাকা খেলোয়াড়দের অনেক সিরিজে বাদ দিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলাচ্ছে।
সমস্যা কি জানেন? শরীরের ক্ষত সবাই দেখে,মনের ক্ষত কেউ দেখেনা।
আপনি হাটতে যেয়ে স্লিপ কেটে, পা ভাঙ্গেন, সবাই সহানুভূতি জানাবে৷ কিন্ত আপনি আপনার সম্পর্ক ব্রেকাপ বা ডিভোর্সের কথা বলেন দেখবেন বেশিরভাগ মানুষ মজা নেবে। শরীরের মত মনের যত্ন ও যে নিতে হয় এই কালচার এখনো আমাদের মাঝে গড়ে ওঠেনি। তাই কাউন্সিলিংয়ের জন্য কেউ মনোবিদের কাছে গেলেও আমরা তাকে পাগল বলি৷ সাকিব রক্তে মাংসে মানুষ তার মানসিক অবসাদ কি আসতে পারেনা?
২. সাকিব আইপিএল খেললে কি এই মানসিক অবসাদের কথা বলত? এমন ও তো হতে পারে, যেসব কারনে তিনি মানসিক অবসাদের কথা বলেছেন আইপিএলে ডাক না পাওয়া তার অন্যতম কারন। আগামী ২৪ মার্চ তিনি ৩৫ বছরে পা দিবেন। ক্রিকেটীয় বয়সের বিচারে এটা শেষের শুরু। ফিট থাকলে আর হয়ত তিন/চার বছর খেলবেন৷ এই বয়সে অনেক গ্রেট ক্রিকেটার ও তার ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবেন। কিন্ত আমাদের সবেধন নীলমনি যে সাকিব। কেউ কারো পারফেক্ট বিকল্প নয়। এত দিনেও যে বোর্ড সাকিবের কাছাকাছি বা ভালো মানের বিকল্প বের করতে পারেনি এর দায়ভার কি বিসিবির ওপরেও কিছুটা বর্তায় না?
হ্যা ভবিষ্যতের আর্থিক নিরাপত্তার কথাও ভাববে যে কেউ। আমি আপনি ভাবিনা? মোশাররফ রুবেল তো স্বয়ং উদাহরন। তার চিকিৎসার সময় আর্থিক সংকট কি মারাত্মক ভাবেই দেখা দিল। সাকিবদের সরকারি চাকরী নেই। পেনশন নেই। যা ইনকাম এই খেলাকে কেন্দ্র করেই। আর কে না জানে আইপিএল টাকার পাহাড়।আমার আপনার সুযোগ থাকলে আইপিএল কি খেলতাম না? দুটো বাড়তি পয়সার জন্য আমরা অনেকেই কি ওভার টাইম করিনা? এবার আইপিএলে ডাক না পাওয়ায় তার ওপর প্রভাব পড়াটাই কি স্বাভাবিক নয়? দিনশেষে সাকিব যতোটা তারকা তারচেয়ে বেশি রক্তে মাংসে মানুষ। তিনি জানেন বয়স বিবেচনায় সময় যত যাবে তার আইপিএল ক্যারিয়ার তত শেষের দিকে যেতে থাকবে।
৩. বিজ্ঞাপন নিয়ে ঠাট্টা তামাশা? আচ্ছা কাদের নিয়ে বিজ্ঞাপন বানানো হয়। যার ব্রান্ড ভ্যালু আছে। দর্শক মহলে গ্রহনযোগ্যতা আছে৷ সাকিবের ব্রান্ড ভ্যালুর কারন কি? দারুন পারফরম্যান্স। তারমানে কি? বিজ্ঞাপন তার খেলায় প্রভাব ফেলছে না। সাকিব জানেন তিনি যখন অবসরে যাবেন তাকে ঘিরে এই উন্মাদনা আর থাকবেনা। তাই সময় থাকতে সৎভাবে তিনি উপার্জন করলে দোষ কোথায়? তিনি কি প্রথম ক্রিকেটার? যিনি কিনা বিজ্ঞাপন করছেন? কোহলিদের আয়ের একটা বড় অংশই আসে বিজ্ঞাপন থেকে। সাকিবে তাহলে এত আপত্তি কেন? হ্যা তিনি যদি নিয়ম ভেঙ্গে কিছু করেন তবে গঠনমূলক সমালোচনা হতেই পারে। কিন্তু শুধু বিজ্ঞাপনের জন্য তার সমালোচনা তার প্রতি অবিচার নয় কি?
কমেন্ট আসতে পারে, কত টাকার বিনিময়ে এই লেখা লিখলাম? সবিনয়ে জানিয়ে রাখি এখন পর্যন্ত সাকিব কান্ডে যারা সাকিবের গঠনমূলক সমালোচনা করেছে তাদের ভেতর আমিও একজন। যুক্তিপূর্ণ দ্বিমত আর গঠনমূলক সমালোচনা পছন্দ করি, কিন্ত শুধু সমালোচনার খাতিরে সমালোচনা করা অপরিপক্কতা ছাড়া কিছুই নয়! ।
)সাকিব আল হাসান একটা ভয়াবহ খারাপ লোক. বৌ-বাচ্চা নিয়ে খেতে বসেছে ভালো কথা সাথে কাজের লোককেও পাশে নিয়ে বসতে হবে কেন? দাওয়াত তো দিয়েছে সাকিব আর সাকিব এর বৌ কে, কাজের লোককে নিশ্চই দাওয়াত দেয় নাই. এক প্লেট খাবার যে সাকিব বেশি খরচ করালো এটা কি ঠিক হলো !!!! ছি সাকিব এটা কি করলো!!!!
যত্তসব আজাইরা পাবলিক, ঠিক এরাই সাকিব সেঞ্চুরি মারলে কাপড় খুল্লা নাচে. একই টেবিলে কাজের লোককে নিয়ে যে ছেলে খেতে বসতে পারে তার বড়ো মনটা কেউ দেখলো না… বড়োই দুঃখজনক. আমি দুঃখিত জনাব সাকিব আল হাসান