Friday , 18 November 2022 | [bangla_date]
  1. আন্তর্জাতিক
  2. খেলাধুলা
  3. প্রবাস জীবন
  4. ফ্রিল্যান্সিং
  5. বাংলাদেশ
  6. বিনোদন
  7. মতামত
  8. রাজনৈতিক

হোমনায় দালাল সিদ্দিক এর অত্যাচারে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ

প্রতিবেদক
Eman Ahmed
November 18, 2022 10:38 am

তার বিরুদ্ধে কথা বললেই মামলা; গ্রাম ছাড়া প্রায় ৩৫টি পরিবার

 

কুমিল্লার হোমনায় থানায় ব্যাপক পরিচিত এবং ভয়ঙ্কর তেলভাজ মামলাবাজ এক আদম দালাল এর অত্যাচারে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ ও গ্রামবাশী প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ‘ সাজানো ঘটনায় ’ একের পর এক মামলা দিয়ে হয়রানী করে প্রতিপক্ষের আত্মীয়- স্বজন ও পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ ও হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সিদ্দিকুর রহমান ওরফে সিদ্দিক দালাল নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ।

সিদ্দিক অত্যান্ত কুটবুদ্ধি সম্পন্ন একজন মানুষ তার গ্রামের বাড়ি উপজেলার আছাদপুর ইউনিয়নের ঘনিয়ারচর গ্রামে । এলাকায় তিনি মামলাবাজ ও আদম দালাল সিদ্দিক নামে পরিচিত । গ্রামের সহজ সরল বাসিন্দাদের সাথে একটু পান থেকে চুন খসলেই বিভিন্ন নাটক বানিয়ে/ সাজিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে মিথ্যা মামলা ঠুকে দেন এই আদম দালাল সিদ্দিক । তার এসব ভুয়া মামলার ফাঁদে পড়ে চরমভাবে হয়রানি ও ক্ষতির শিকার হচ্ছেন ঘনিয়ারচর গ্রামের অ এক নিরীহ সাধারণ পরিবার । তবে তিনি নিজে তেমন কোনো মামলার বাদী হচ্ছেন না বলেও খবর পাওয়া যায় । কিন্তু তিনি এলাকায় কোনো অঘটন ঘটলে বা কোনো অপ্রতিকর ঘটনার মাধ্যমে কেউ আহত হলে প্রকৃত অপরাধীদের সাথে কথা বলে মোটা অংকের অর্থের বিনীময়ে তাদের আড়াল করতে সমাজের নির্দোষ, নির অপরাধ ও সাধারন মানুষকে হয়রানী করার উদ্দেশ্যে প্রকৃত পক্ষে যে ব্যক্তিরা কোনো ভাবেই ঘটনার সাথে জড়িত নয় তাদের কে ও আসামী করে ভুক্তভোগী পরিবার কে নানা ছলে, কৌশলে যে ভাবেই পারেন আয়ত্ব করে মামলা ঠুকতে বাধ্য করেন । এমনকি কোনো কারনে যদি সেই পরিবারটি মামলা করতে রাজি না হন তা হলে তিনি নিজেই বাদী হয়ে মামলা ঠুকে দেন বলেও এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী

 

মামলাবাজ এবং আদম দালাল সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক এর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে এ গ্রামের অন্তত ৩৫টি পরিবার গ্রাম ছাড়া । গ্রামে আসতে তাদের রয়েছে সিদ্দিক বাহিনী এবং পুলিশের ভয় । অনেকে জামিনে থাকার পরও সিদ্দিকের সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে এলাকায় প্রবেশ করতে পাড়ছেন না তারা । কিন্তু তারপরও শিকার হচ্ছেন একের পর এক হয়ারানী মূলক মিথ্যা মামলার । এর থেকে প্রতিকার পেতে ভূক্তভোগী পরিবার গুলো প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ।

সরেজমিনে পরিদর্শনে গেলে গ্রামবাসী জানান, বিগত ১বছর পূর্বে চাঞ্চল্যকর যুবলীগ কর্মী জহিরুল ইসলাম ওরফে কালা জহির হত্যাকান্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামলাবাজ ও আদম দালাল সিদ্দিক এলাকায় তার আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তারসহ বাড়তি সুবিধা নিতে আছাদপুর ইউনিয়নের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন পাঠান এবং তার ভাতিজা মকবুল পাঠান কে প্রধান আসামী করে মোট ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকার জন্য নিহত পরিবারের সদস্যদের পরামর্শ প্রদান করেন সিদ্দিক । তার পরামর্শ অনুযায়ী থানায় মামলাটি দায়ের করা হয় । যার ফলে এ মামলায় অনেক নির্দোষ ব্যক্তিকেই আসামী করা হয় । এই হত্যা মামলার ভয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন । জহির মারা যাবার পূর্বে তার নিজ মুখে এই ঘটনার সাথে জড়িত প্রকৃত দোষী৪/৫ জনের নাম বলে যায় যা ভিডিওতে প্রমাণিত । কিন্তু সিদ্দিক নিহত জহির এর পরিবারের লোকজন কে ফুসলিয়ে এবং অর্থের লোভ দেখিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন পাঠান ও তার ভাতিজা মকবুল হোসেন পাঠানসহ নির্দোষ, নিরপরাধ ২৩ জন ব্যক্তিকে আসামী করে নিহতের বড় বোন পারুল বেগম কে দিয়ে হত্যা মামলাটি করানো হয় ।

 

সিদ্দিক এর ভয়ে নাম পরিচয় দিতে অনইচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানান, এ গ্রামের অধিকাংশ লোকজনই এখন মামলাবাজ ও আদম দালাল সিদ্দিকের হতে জিম্মি । পাশাপাশি নিজের আত্মীয়- স্বজন ও প্রতিবেশিরাও রক্ষা পায়নি এই মামলাবাজ সিদ্দিক এর হাত থেকে । সিদ্দিকের মামলাবাজীর ষড়যন্ত্রে জর্জরিত হয়ে এলাকার অনেকেই আজ মানসিক যন্ত্রনায় ভুগছেন । শুধু তাই নয় সিদ্দিক হত্যা মামলার ভয় দেখিয়ে বীরদর্পে তার সাঙ্গ- পাঙ্গ নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন চাঁদাবাজির রমরমা বাণিজ্য । এ গ্রামের অনেক পরিবারের কাছ থেকে নিয়েছে মোটা অংকের টাকা

মিথ্যা মামলা থেকে হত্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন মোটা অংকের অর্থ এমনটাই জানিয়েছেন একাধিক ভুক্তভোগী পরিবার । হত্যা মামলাসহ এখন পর্যন্ত ৫টি মামলা চলমান রয়েছে । এসব মামলার বেশিরভাগই মারপিট সংক্রান্ত ।

 

মামলাগুলোতে আসামি করা হয়েছে গ্রামের অর্ধশতাধিক বাসিন্দাকে । গ্রামে এমনও লোক আছে যার বিরুদ্ধে সিদ্দিক ৫টি মামলাতেই আসামী করিয়েছেন ।

সিদ্দিকের দায়ের করানো মিথ্যা মামলার কারণে আদালতের বারান্দায় দৌড়াদৌড়ি আর আর্থিক ক্ষতিতে পড়ে অনেকেই হয়েছেন নিস্ব । গরিব পথের ফকির

 

অন্য মানুষকে দিয়ে মামলা করিয়েই ক্ষান্ত হননি সিদ্দিক । সে নিজে ও নিজের ছেলে এবং আপন ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ছাবিনা বেগমকে দিয়েও করিয়েছেন মামলা । সিদ্দিকের দায়ের করানো মামলার আসামি হিসাবে এলাকার চেয়ারম্যান, চেয়ারম্যানের ভাতিজা, বিশিষ্ট ব্যক্তিসহ যে তার অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন তার বিরুদ্ধেই করিয়েছেন একের পর এক মামলা ।

এজন্যই এলাকায় স্থানীয়ভাবে সিদ্দিকুর রহমান এর পরিচিতি রয়েছে মামলাবাজ ও আদম দালাল সিদ্দিক হিসেবে ।

 

উল্লেখ্য- গত ইউপি নির্বাচনে উপজেলার আছাদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে সিদ্দিক নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়ে অশংগ্রহণ করেছিলেন । তার নিকটতম প্রতিদ্ধন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র হতে চেয়ারম্যান পদে আনারস প্রতিকের প্রার্থী জালাল উদ্দিন পাঠান । সেই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জালাল উদ্দিন পাঠান সিদ্দিক কে পরাজিত করে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন । এর পর থেকেই শুরু হয় উভয় পক্ষের মধ্যে হিংসা- প্রতিহিংসা মারামারি । সে প্রতিহিংসার জের ধরে মামা জাহাঙ্গীর নামে এক ইউপি সদস্যের আপন ভাই এবং নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সিদ্দিক এর কর্মী মাইন উদ্দিনকে পিটিয়ে মারাত্মক ভাবে আহত করেন ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন পাঠান পক্ষের কর্মী- সমর্থকরা । পরে আহত মাইন উদ্দিন( ২৮) কে উদ্ধার করে হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করেন । রেফারের পর থেকে সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় প্রতিনিয়ত আহত মাইন উদ্দিন এর খোজ- খবর এবং চিকিৎসার খরচ বাবদ ১লক ্ষ ২০হাজার টাকা দিয়েছেন বলে জানান আহত মাইন উদ্দিন ও মামা জাহাঙ্গীর এর মা । তাদের পরিবারের কারও কোনো সম্মতি ও দাবী না থাকা এবং মামলা করতে রাজি না হওয়ার পরও দীর্ঘ্য ৪ মাস পর নিজের স্বার্থ হাসিল করতেই সিদ্দিক নিজে বাদী হয়েই মকবুল পাঠান কে ১নং আসামী করে থানায় মামলা ঠুকে দেন বলেও জানান আহত মাইন উদ্দিনের মা রাবিয়া বেগম ।

আহত মাইন উদ্দিন এর মা রাবিয়া বেগম তার ছেলের মামলার বিষয়ে বলেন, মকবুল সাব কে আসামী করে মামলা দিয়েছে এটা আমি জানি না । এছাড়া আমি বা আমার পরিবারের লোকজন কেউ এই মামলার বিষয়ে জানেই না । মকবুল পাঠান সাব অনেক ভাল মানুষ তিনি আমার ছেলের চিকিৎসার জন্য দুই জন মানুষ কে দিয়ে ১লক ্ষ ২০ হাজার টাকা দিয়েছে । তিনি বলেছে যদি আমাদের কোনো সমস্যা হয় দেখবেন । টাকা পয়সা যদি আরও লাগে তা হলেও দিবেন । এখন স্যার আপনে গো কথা হুইনা বুঝতে পাড়ছি তিনি কেন আমগো লগে আর যোগযোগ করছেন না কেড়ে । মামলার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা যদি মামলা করতাম তা হলে যখন ঘটনা ঘটেছে তখনই করতে পারতাম । হুনছি মামলা হইছে ৪ মাস পর । আর সিদ্দিক নাকি মামলা করছে তার সাথে তো আমগো কোনো সম্পর্ক নাই । সে নির্বাচন করছে চেয়ারম্যানি আর আমার পোলা মামা জাহাঙ্গীর নির্বাচন করছে মেম্বরি তার কারনেই তো আমার ছেলে মাইর খাইছে । তখন কোনো খবর লয় নাই ৪ মাস পর

 

সর্বশেষ - বিনোদন